মোহাম্মদ মামুন উদ্দিন ( অনলাইন রিপোর্টার)
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার একমাত্র চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’ এখন জনসেবার আশ্রয়স্থল নয়, বরং দুর্নীতি ও নৈরাজ্যের আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। গরিব ও অসহায় রোগীরা দিনের পর দিন প্রতারণার শিকার হলেও নেই কোনো কার্যকর তদারকি বা জবাবদিহিতা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও কর্মচারীদের একাংশ নিয়মিত অনুপস্থিত। কেউ সকালেই অফিস ত্যাগ করেন, কেউবা মাসের পর মাস ‘ডিউটির বাইরে’। চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা হতাশা আর ভোগান্তির মধ্যে পড়ছেন। ওষুধ সরবরাহে অনিয়ম, টিকিট কেটে চিকিৎসা না পাওয়া, প্রসূতি সেবায় অব্যবস্থা—সব মিলিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি যেন এক ‘অত্যাচারখানা’য় রূপ নিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন,
“প্রশাসনিক নজরদারি একেবারেই নেই। যার যেমন ইচ্ছা, সে তেমন চলছে। কিছু বলার নেই, শুনারও কেউ নেই।”
স্থানীয়দের দাবি, এখানে দীর্ঘদিন ধরেই এই দুর্নীতির চর্চা চলে আসছে। রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার সুযোগে দায়সারা কর্মপদ্ধতি চালিয়ে যাচ্ছে একটি প্রভাবশালী চক্র।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মানসী রানী দাস। তিনি বলেন,
“আমরা এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট।”
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন,
“উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নিয়মিত নজরদারি চলছে। কোনো অনিয়মের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে, নোয়াখালী জেলার সিভিল সার্জন ডা. মরিয়ম সিমি বলেন,
“হাতিয়া একটি দ্বীপাঞ্চল হওয়ায় আমরা সেবার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। কেউ অনিয়মে জড়িত থাকলে ছাড় দেওয়া হবে না।”
স্থানীয়দের প্রত্যাশা, দীর্ঘদিনের এই অব্যবস্থাপনার অবসান ঘটিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি যেন একটি কার্যকর জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে রূপ নেয়।
যোগাযোগ
বার্তা বিভাগঃ 01788-729304, 01883-306048
ই-মেইল: shadhinsurjodoy@gmail.com
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | স্বাধীন সূর্যোদয় | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।