মোঃমাকসুদ আলম (লালমোহন প্রতিনিধি)
ভোলার চরফ্যাশনে উপকূলের মিঠাপানি অধ্যুষিত মেঘনা-তেঁতুলিয়ার অভয়াশ্রমে ঝাটকা সংরক্ষনের অভিযান কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে নেই। নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে অবাধে নিধন হচ্ছে ঝাটকা ইলিশ।
মঙ্গলবার মৎস্য কর্মকর্তা আয়োজনে ঝাটকা সংরক্ষণ অভিযান সপ্তাহ পালন করা হলেও বাস্তবে অভয়াআশ্রমে দেখা মেলেনি কোন অভিযানের। নেই কোন ঝটকা সংরক্ষনের প্রচারনা। নাম মাত্র ঝাটকা সংরক্ষণ সাপ্তাহের মিটিং দিয়ে দ্বায়িত্ব শেষ করেই ঘুমাচ্ছেন কর্মকর্তারা। কর্মকর্তারা নিরব ভূমিকায় থাকায় ইলিশ শিকারে মেতে আছেন জেলেরা।
যদিও মৎস্য কর্মকর্তা ঝাটকা সংরক্ষণ অভিযান অব্যহত রয়েছে বলে দাবী করলে দেখাতে পারেনি কোন জেল জরিমানার প্রমান পত্র।
যদিও মৎস্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে ঘাটে ঘাটে মাছধরার সুযোগ দিয়ে জেলেদের থেকে ‘উপরী’ নেয়ার অভিযোগ আছে। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জেলেরা নির্বিঘ্নে নিষিদ্ধজোনে ইলিশসহ সবমাছ শিকার, বিক্রি, পরিবহন ও মজুদ অব্যহত রেখেছেন ।
জানা যায়, মেঘনা ও তেঁতুলিয়ার মৎস্য অভয়াশ্রমে ইলিশ রক্ষায় প্রতিবছরের মতো এবারও পহেলা মার্চ থেকে দু’মাস পর্যান্ত তেঁতুলিয়া নদীর ১শ’ কিমি এবং মেঘনা নদীর ৯০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। কর্তৃপক্ষের নজরধারী না থাকায় নিষেধাজ্ঞার মধ্যে মাছ শিকারে বেপরোয়া জেলেরা। নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশের ছড়াছড়ির পাশাপাশি বাজারমূল্য বেশী থাকায় জেলেরা মাছ শিকার থেকে পিছুহাটছে না।
সরেজমিনে সামরাজ, বকসী, কচ্চপিয়া, বেতুয়া, নতুন স্লুইজ, ঘোষেরহাট, গাছির খালসহ বেশ কিছু মৎস্য ঘাটে গিয়ে দেখাযায়, চরফ্যাশন উপজেলার উপকুলের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে জেলেরা ইলিশাসহ নানান প্রজাতির মাছ শিকারে মেতে রয়েছেন। জোয়ার-ভাটার সময় মেনে নদীতে জাল ফেলছেন এবং জাল তুলে হাক-ডাক দিয়ে ঘাটে মোহাজনের আড়তে শিকার করা মাছ ডাক দিয়ে বিক্রি করছেন। ঘাটের আড়ৎ থেকে প্যাকেট হয়ে ওই সব মাছ স্থানীয় বাজারে যাচ্ছে। যার বড় অংশ নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে ঢাকা চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন শহরেও চালান হচ্ছে।পাশাপাশি শহর বাজারসহ গ্রামগঞ্জের বাজারে বিক্রি হচ্ছে অবাধে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুলারহাট থানার গাছির খাল ঘাটে জেলেরা জানান, জেলেরা দৈনিক আয় নির্ভর জীবন যাপন করছেন। নিষিদ্ধ সময়ে খাদ্য সহায়তা পান না জেলেরা। এজন্য জীবিকার প্রয়োজনে স্থানীয় প্রভাবশালী ফরিয়াদের সাথে চুক্তি ভিত্তিক মাছ শিকার করছেন তারা। মৎস্য অফিসের কর্মকর্তাদের উপরি বাবদ তার ছোট নৌকায় ৫০০টাকা ও বড় ট্রলারে ১০০০টাকা দিয়ে থাকেন। ওই টাকা দিয়েই তারা মাছ শিকারে যান।
সামরাজ ঘাটের জেলে আবদুর রব জানান, নিষেধাজ্ঞায় স্থানীয় ঘাটের লোকজন প্রশাসনকে ম্যানেজের নামে নৌকা ও ট্রলার থেকে চাঁদা নিয়ে থাকেন। তাই তারা অবাধে মাছ শিকার করতে পারছেন। প্রশাসনের কর্মকর্তারা অভিযানে আসার আগেই তারা খবর পেয়ে যান। তাই তাদের মাছ শিকারে কোন অসুবিধা হয়না।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু জানান, জেলেরা যাতে অভয়াশ্রমে মাছ শিকার করতে না পারে, সেজন্য প্রশাসনের যথাযথ মনিটরিং চলছে। তবে জনবল ও অভিযানের বরাদ্দ না থাকায় জোরদার অভিযান করা যচ্ছেনা। তবে ঘাটে কারা জেলেদের কাছ থেকে সুবিধা দেয়ার নামে টাকা নিচ্ছে তা আমার জানা নাই।
যোগাযোগ
বার্তা বিভাগঃ 01788-729304, 01883-306048
ই-মেইল: shadhinsurjodoy@gmail.com
কার্যালয়: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | স্বাধীন সূর্যোদয় | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।