মোঃ রেদওয়ান(স্টাফ রিপোর্টার)
ফিলিস্তিনে ইসরাইলী আগ্রাসনের প্রতিবাদে ঢাকায় "মার্চ ফর গাজা" কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট নামে একটি সংগঠন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলো।
আজ শনিবার বিকেল ৩টার দিকে মূল কর্মসূচি শুরু হয়।
এ কর্মসূচিতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের মঞ্চে একসাথে দেখা গেছে।
তবে জাতীয় পার্টি এবং বাম ধারার রাজনৈতিক দলগুলো ইসরাইলী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বহু বছর ধরে সোচ্চার থাকলেও তাদের দলের কোন নেতাকে দেখা যায়নী "মার্চ ফর গাজা" কর্মসূচীর এ মঞ্চে।
কর্মসূচীকে ঘিরে সকাল থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ জড় হতে থাকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
কর্মসূচীতে আশা হাজার হাজার মানুষের মুখে উচ্চারিত হয় "তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন","ফ্রী ফ্রী, প্যালেস্টাইন প্যালেস্টাইন" শ্লোগান!
শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।
কর্মসূচীতে অংশ নেন মিজানুর রহমান আজহারীসহ বিভিন্ন ইসলামী বক্তা।
বিকাল ৪টার দিকে ঘোষণা পত্র পাঠের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এ কর্মসূচি।
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।
ঘোষনাপত্রে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি নিন্মে উল্লিখিত দাবিগুলো তুলে ধরা হয়-
১। জায়নবাদী ইজরায়েলের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে নিশ্চিত করতে হবে;
২। যুদ্ধবিরতি নয়—গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ও সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে,
৩। ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী ভূমি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বাধ্যবাধকতা তৈরি করতে হবে;
৪। পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে;
৫। ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা, এবং রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত করতে হবে।
এ ছাড়া মাহবুবুর রহমান ঘোষণাপত্রে মুসলিম বিশ্বের সরকার ও মুসলিম উম্মাহর প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনগুলোর কাছে নিন্মোক্ত আহ্বান জানান-
১। ইসরায়েলের সঙ্গে অর্থনৈতিক, সামরিক ও কূটনৈতিক সব সম্পর্ক অবিলম্বে ছিন্ন করতে হবে।
২। জায়নবাদী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
৩। গাজার মজলুম জনগণের পাশে চিকিৎসা, খাদ্য, আবাসন ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ সর্বাত্মক সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়াতে হবে।
৪। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসরায়েলকে এক ঘরে করতে সক্রিয় কূটনৈতিক অভিযান শুরু করতে হবে।
৫। জায়নবাদের দোসর ভারতের হিন্দুত্ববাদী শাসনের অধীনে মুসলিমদের অধিকার হরণ, বিশেষ করে ওয়াকফ আইনে হস্তক্ষেপের মতো রাষ্ট্রীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ওআইসি ও মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে দৃঢ় প্রতিবাদ ও কার্যকর কূটনৈতিক অবস্থান নিতে হবে।
এছাড়া ঘোষণা পত্রে বাংলাদেশর সরকারের প্রতিও আহ্বান জানানো হয় যে-
১। বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘Except Israel’ শর্ত পুনর্বহাল করতে হবে এবং ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ার অবস্থান আরও সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে হবে।
২। সরকারের ইসরায়েলি কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যত চুক্তি হয়েছে, তা বাতিল করতে হবে।
৩। রাষ্ট্রীয়ভাবে গাজায় ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা পাঠানোর কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪। সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং আমদানিনীতিতে জায়নবাদী কোম্পানির পণ্য বর্জনের নির্দেশনা দিতে হবে।
৫। জায়নবাদের দোসরদের ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকারের অধীনে মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান নির্যাতনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ জানাতে হবে, যেহেতু হিন্দুত্ববাদ আজ শুধু একটি স্থানীয় মতবাদ নয়—বরং আন্তর্জাতিক জায়নিস্ট ব্লকের অন্যতম দোসর।
৬। পাঠ্যবই ও শিক্ষানীতিতে আল-আকসা, ফিলিস্তিন এবং মুসলিমদের সংগ্রামী ইতিহাসকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ মুসলিম প্রজন্ম নিজেদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আত্মপরিচয় নিয়ে গড়ে ওঠে।
এছাড়া ঘোষণা পত্রে ইসরাইলী দখলদারিত্বকে টিকিয়ে রাখা সকল পণ্য, কম্পানি ও শক্তিকে বর্জনের অঙ্গিকার সহ বিভিন্ন অঙ্গিকার করা হয়।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের প্রধান অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন।
যোগাযোগ
বার্তা বিভাগঃ 01788-729304, 01883-306048
ই-মেইল: shadhinsurjodoy@gmail.com
কার্যালয়: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | স্বাধীন সূর্যোদয় | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।