পত্নীতলায় আলোচিত মোস্তাফিজুর হত্যা ১০ মাসেও গ্রেফতার হয়নি মুল আগামী
মোঃ সাজেদুর রহমান, স্টাফ রিপোর্টার পত্নীতলা নওগাঁ
প্রকাশিত:
বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০২৫
মোঃ সাজেদুর রহমান,
স্টাফ রিপোর্টার পত্নীতলা (নওগাঁ)
নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলায় মেধাবী ছাত্র ও এসএসসি পরীক্ষার্থী মোস্তাফিজুর হত্যার ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও মুল আসামীদে গ্রেফতার করতে পারেনি পত্নীতলা থানা পুলিশ।
জানা যায় ২০২৪ সালের ৬ নভেম্বর হত্যা করা হয় নওগাঁর পত্নীতলার মধইল গ্রামের এসএসসি পরীক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমানকে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী ছিল না। মোবাইল ফোনের কললিস্ট ধরে সন্দেহভাজন কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয় পুলিশ। মোস্তাফিজের ব্যবহৃত ফোনটি ফরেনসিক ল্যাবে পাঠালেও ১০ মাসেও প্রতিবেদন না পাওয়ায় তদন্ত সেখানেই আটকে আছে।
মোস্তাফিজের মা মোসলিমা বেগম বলেন, ‘আমরা বারবার থানা ও দপ্তরে গিয়েছি। পুলিশ সন্দেহভাজন আসামিদের ডেকে কথা বলে ছেড়ে দিয়েছে। তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই। আমার ছেলে মারা গেছে–এটি যেন সবার কাছে ভুলে যাওয়া ঘটনা হয়ে গেছে।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পত্নীতলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু তালেব বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে কয়েকজনের জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছি। প্রমাণ সংগ্রহে সময় লাগছে। মোবাইল ফোনের ফরেনসিক প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছি।’ তদন্তে ধীরগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সঠিক তথ্য উদ্ঘাটনে ১০ মাস নয়, প্রয়োজনে আরও বেশি সময় লাগতে পারে।’
উল্লেখ্য ২০২৪ সালের ৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজ পড়তে বাড়ি থেকে বের হয় মোস্তাফিজ। এরপর আর ফেরেনি সে। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার সন্ধান মেলেনি। ১৩ নভেম্বর স্থানীয় এক কৃষকের ধানক্ষেতে তার অর্ধগলিত লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় পত্নীতলা থানায় হত্যা মামলা হয়। পুলিশ সন্দেহভাজন কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এর মধ্যে নাইম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে নাইম জামিন নিয়ে বের হয়ে আসে। অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনার ১০ মাস হয়ে গেলেও, আসামি শনাক্ত না হওয়ায় তদন্তের ধীরগতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মোস্তাফিজের পরিবার ও সহপাঠীরা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, হত্যাকাণ্ডটি পূর্বপরিকল্পিত। এ ঘটনায় একই এলাকার নাঈম, রানা, সাজ্জাদ ও সনির সম্পৃক্ততা রয়েছে। কয়েকদিন আগে একটি মোবাইল ফোন হারানোকে কেন্দ্র করে মোস্তাফিজের সঙ্গে তাদের বিরোধের সৃষ্টি হয়। এর জের ধরেই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিয়েছে। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ ব্যবস্থা নিতে দেরি করছে। অভিযুক্ত নাইমকে গ্রেপ্তারের পর তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর থেকে সে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আরও কয়েকজন চিহ্নিত দুষ্কৃতকারী প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে।
মোস্তাফিজের কয়েকজন সহপাঠী জানায়, ‘এলাকায় কিছু চিহ্নিত ছেলের কারণে আমরা রাতে বের হতে ভয় পাই। তাদের একজন নাইম। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে জামিনে বের হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটি আমাদের জন্য ভয়ের। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ ও ফোনের কললিস্ট ধরে নাইমসহ চিহ্নিত কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এতদিনে কিছু না কিছু বের হয়ে আসত।’
থানার ওসি এনায়েতুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত শেষের দিকে। মোবাইল ফোনের ফরেনসিক প্রতিবেদন পেলে আরও কিছু আসামি শনাক্ত হবে। হত্যার কোনো সূত্র ছিল না। শূন্য থেকে শুরু করতে হয়েছে। বাদীও জানেন পুলিশ কতটা চেষ্টা করছে। রিপোর্ট পেলে এও মামলায় আসামিদের ধরতে পুলিশের জোর তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।