থানা প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানা এলাকা এখন যেন মাদক চোরাকারবারিদের একটি হটস্পটে রূপ নিয়েছে। যেকোনো বয়সের মানুষের জন্য হাতের নাগালে মিলছে ভয়াবহ নেশাদ্রব্য। এলাকাবাসী অভিযোগ করছে, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দিনের পর দিন চলছে মাদক বেচাকেনা আর সেবনের ভয়াল উৎসব।
বিশেষ করে চন্দ্রগঞ্জ থানার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের নির্দিষ্ট এলাকাগুলো এখন মাদকসেবী ও বিক্রেতাদের নিরাপদ ঘাঁটি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সীমান্তবর্তী অবস্থানের সুযোগ নিয়ে নোয়াখালীর সদর ও বেগমগঞ্জ থেকে প্রবেশ করা মাদক দ্রব্য সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে পুরো চন্দ্রগঞ্জ এলাকায়।
স্থানীয়রা জানায়, চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের দেওপাড়া, উত্তর-পূর্ব পাঁচপাড়া, বসুদুহিতা, চরশাহী ইউনিয়নের স্টিলের ব্রিজ, মিয়ার বাজার, নতুন হাট এবং হাজিরপাড়া ইউনিয়নের বড়ভল্লবপুর, দীঘলি ইউনিয়নের রাজাপুর—এই এলাকাগুলো এখন মাদকের আস্তানা। এখান থেকেই ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের বাজার, পাড়া ও জনপদে।
বিচ্ছিন্নভাবে ছোট চালানে মাদক সরবরাহ করে পুলিশি নজরদারি এড়িয়ে যাচ্ছে একদল সংঘবদ্ধ চক্র। স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, চন্দ্রগঞ্জে কিছু নামধারী সাংবাদিক, কথিত ডাক্তার, রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে থাকা ব্যক্তি পর্যন্ত মাদকের করাল ছায়ায় ঢুকে পড়েছে। ফলে এই অপরাধ নেটওয়ার্ক ভেঙে ফেলা কঠিন হয়ে পড়েছে প্রশাসনের জন্য।
আরও উদ্বেগজনক তথ্য হলো, বেশ কিছু মাদকসেবী ও খুচরা বিক্রেতা একবার ধরা পড়লেও পরে ‘মুচলেকা’ দিয়ে সহজেই ছাড়া পেয়ে যায়, আবারও ফিরে আসে সেই অপরাধচক্রে।
এ অবস্থায় স্থানীয় সচেতন মানুষজন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, চন্দ্রগঞ্জকে মাদকের ভয়াল থাবা থেকে বাঁচাতে কঠোর অভিযান ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করার জন্য। একই সঙ্গে এ সমস্যার মূল শিকড় তুলে ফেলে, সমাজ থেকে এই বিষদ্রব্য নির্মূল করতে দরকার নিয়মিত মনিটরিং, আইনি পদক্ষেপ এবং সামাজিক সচেতনতা।
চন্দ্রগঞ্জের মানুষ এখন চায়—একটি নিরাপদ, নেশামুক্ত প্রজন্ম এবং সুস্থ সমাজ। এজন্য এখনই সময়, চন্দ্রগঞ্জকে বাঁচাতে একযোগে এগিয়ে আসার।