 
																
								
                                    
									
                                 
							
							 
                    
আসাদুজ্জামান, জেলা প্রতিনিধি:
৯.৮.২৫গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যাকান্ড ও দেশব্যাপী সাংবাদিক নিপীড়নের প্রতিবাদ এবং সাংবাদিকদের অধিকার আদায় ও সাংবাদিক সুরক্ষা নীতিমালা প্রণয়নের দাবিতে সাংবাদিকদের ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে কুড়িগ্রামে আত্মপ্রকাশ করলো কুড়িগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (কেজিইউজে)।
শনিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে জেলার দেড় শতাধিক সংবাদকর্মীদের নিয়ে ‘সাংবাদিক সম্মিলনের’ মাধ্যমে কেজিইউজে’র আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কোরআন তেলাওয়াত, গীতাপাঠ ও জাতীয় সংগীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে সম্মিলন অনুষ্ঠানের শুরু হয়।এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি  সালেকুজ্জামান সালেক ও প্রধান বক্তা ছিলেন রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল মান্নান।
সিনিয়র সাংবাদিক আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মানিত অতিথি হিসেবে পুলিশ সুপার মো: মাহফুজুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈদা পারভীন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ, এনসিপির জেলা প্রধান সমন্বয়কারী মুকুল মিয়া, কুড়িগ্রাম পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর বিপ্লব। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার রহমান খন্দকার, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম মানিক, সাংগঠনিক সম্পাদক  বাদশাহ ওসমানী ও ট্রেজারার মমিনুল ইসলাম রিপন ।
বক্তারা বলেন, পেশাদারিত্বের মনোভাব নিয়ে সাংবাদিকতা করা উচিৎ। কারো লেজুড়বৃত্তি কিংবা দলবাজি করে সাংবাদিকতা সম্ভব নয়।  সমাজের দর্পণ হিসেবে সমাজের সকল সংগতি, অসংগতি তুলে ধরাই সাংবাদিকদের কাজ। আর এ  কাজ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের নিগৃহীত নিপীড়িত হতে হয়। এমনকি জীবন দিতে হয়। সম্প্রতি গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ভয়াবহতা তুলে ধরে সাংবাদিক হত্যা ও নিপীড়নে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
প্রধান আলোচক মাজহারুল মান্নান বলেন, সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনও বিকল্প নেই।
সম্প্রতি গাজীপুরে একজন সাংবাদিককে নিপীড়ন ও একজন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। সাগর-রুনি হত্যান্ডসহ বিগত সময়ে  সাংবাদিক হত্যা ও নিপীড়নের জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়নি। ফলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। এমনকি জুলাই আন্দোলনে যেসব সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন তারও বিচার হয়নি। বিচার হলে এসব অপরাধ কমে আসতো। এজন্য আমরা সাংবাদিক সুরক্ষা নীতিমালা বা আইন প্রণয়নের দাবি জানাই।’
রংপুর বিভাগীয় এই সাংবাদিক নেতা আরও বলেন, ‘ সাংবাদিক নিপীড়নসহ সকল অপরাধ ও হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে দেশের রাজনীতিবিদ, প্রশাসন এবং সাংবাদিকদের একসাথে কাজ করতে হবে। কোনও প্রতিবেদন প্রকাশ হলে সাংবাদিককে আক্রমন না করে প্রকাশিত সংবাদ যাচাই করে অভিযুক্তদের ব্যবস্থা নিতে হবে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে প্রেসকাউন্সিলের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
সকল স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সাংবাদিকদের ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে মাজহার মান্নান বলেন, ‘ সকল সাংবাদিককে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। নিজেদের দাবি দাওয়া তুলে ধরে তা আদায় করে নিতে হবে। আর দাবি আদায়ের জন্য নিজেদের ভেদাভেদ ভুলে  একই প্লাটফর্মে কাজ করতে হবে। তবেই সাংবাদিক সুরক্ষা নীতিমালা গঠন করা সম্ভব হবে। যার মাধ্যমে সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।’
আলোচনা শেষে বাংলা ট্রিবিউন ও আজকের পত্রিকার কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে আহ্বায়ক ও এটিএন নিউজের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি মনোয়ার হোসেন লিটনকে সদস্য সচিব করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট কুড়িগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন এর আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আহ্বায়ক কমিটি স্বল্প সময়ের মধ্যে পুরো জেলার সাংবাদিকদের নিয়ে ইউনিয়নের একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবে।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদ ও আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
আসাদুজ্জামান, জেলা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম।
০১৭১৮৬৮৫৪০৮