ডেস্ক নিউজ
আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম: একরামুল হক হত্যাকাণ্ড ও বিতর্কিত অধ্যায়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং প্রশাসনের উপসচিব পদ থেকে দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করা আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের নাম দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ২০০৯ সালে চাকরি ছাড়ার পর তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং ক্ষমতাসীন দলের উচ্চপর্যায়ে প্রভাব বিস্তার করেন। তবে তার উত্থান এবং কর্মকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক রয়েছে।
২০১৪ সালের ২০ মে ফেনীর একাডেমি এলাকায় প্রকাশ্যে বর্বরোচিতভাবে খুন হন ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা একরামুল হক। এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে নানা তথ্য উঠে আসে, যেখানে আলাউদ্দিন নাসিমের নাম পরিকল্পনাকারী হিসেবে সন্দেহের তালিকায় ছিল বলে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়। একরামুল হকের জনপ্রিয়তা এবং রাজনৈতিক অবস্থান অনেকের জন্যই হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ফলে এই হত্যাকাণ্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত বলে ধারণা করা হয়।
রাজনীতিতে নাসিমের প্রভাব এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো একাধিকবার আলোচনায় এসেছে। বিশেষ করে ফেনীর রাজনীতিতে তার দাপট নিয়ে সাবেক সাংসদ জয়নাল হাজারীর মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। একরামুল হকের হত্যাকাণ্ডের পর দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হাজারী বলেন, ফেনীর রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ নাসিমের হাতে, তাই এ ঘটনায় তার ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না।
এছাড়া, অতীতে বিভিন্ন সময় নাসিমের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়া এবং তা বিদেশে পাচারের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিনিয়োগের আড়ালে দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০২৩ সালের ২ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে।
ফেনীর সাবেক এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি ভারতের কলকাতা থেকে বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র চালাচ্ছেন। বিভিন্ন মহলের দাবি, তার অর্থায়নেই কিছু গোষ্ঠী সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।
বর্তমানে দুদকের অনুসন্ধানের কারণে তার সম্পদের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে এবং বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তার অবৈধ সম্পদের বিষয়ে দ্রুত চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।