মোহাম্মদ মামুন উদ্দিন (অনলাইন রিপোর্টার)
নোয়াখালীতে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে টানা তিন দিন বিচ্ছিন্ন থাকার পর হাতিয়ার সঙ্গে জেলা সদরসহ সারাদেশের নৌ যোগাযোগ অবশেষে স্বাভাবিক হয়েছে। শনিবার (৩১ মে) সকাল ৮টা থেকে পুনরায় নৌ চলাচল শুরু হয়। এতে দুই পাড়ে আটকে থাকা শত শত যাত্রী তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হন, ফিরে আসে স্বস্তি।
হাতিয়ার আফাজিয়া বাজারের বাসিন্দা তসলিম উদ্দিন জানান, “নৌ চলাচল বন্ধ থাকায় হাতিয়ার সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছিলেন। এখন আবার যাতায়াত চালু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে।” তিনি আরও জানান, বন্ধের সময় চেয়ারম্যান ঘাটে চারটি মরদেহ তিন দিন ধরে আটকে ছিল, যা পরবর্তীতে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তাদের গন্তব্যে পাঠানো হয়। এ ছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা শিক্ষার্থীদের বিশেষ সহযোগিতায় পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেয় প্রশাসন।
নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দা হারুন অর রশিদ বলেন, “টানা বৃষ্টির পর শনিবার সকাল থেকে আবহাওয়া অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। সূর্যের আলোতে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।” তিনি জানান, গত চার দিনের টানা বৃষ্টিতে এলাকার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়, তবে এখন আবার কর্মব্যস্ততা শুরু হয়েছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন জানান, “লঘুচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েক ফুট উচ্চতায় জোয়ার হয়। সমুদ্র উত্তাল থাকায় গত বুধবার থেকে সাময়িকভাবে সকল ধরনের নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় শনিবার সকাল থেকে পুনরায় নৌ যোগাযোগ চালু করা হয়েছে।”
তবে নোয়াখালী জেলা শহরের বেশ কিছু এলাকায় এখনও জলাবদ্ধতা অব্যাহত রয়েছে। মাইজদীর ফ্ল্যাট রোড, শিল্পকলা একাডেমি সড়ক, হাকিম কোয়ার্টারসহ বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকায় সাধারণ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থার অব্যবস্থাপনার কারণেই এ সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, “প্রশাসনের সব ধরনের প্রস্তুতি ছিল। আল্লাহর রহমতে বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি। সূর্যের আলোয় মানুষ স্বস্তি ফিরে পেয়েছে।” তিনি আরও জানান, “জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।”