1. lukmanmiah2619@gmail.com : news_shadhin :
  2. shadhinsurjodoy@gmail.com : স্বাধীন সূর্যোদয় : স্বাধীন সূর্যোদয়
  3. info@www.shadhinsurjodoy.com : স্বাধীন সূর্যোদয় :
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ১০:১৭ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি:
স্বাধীন সূর্যোদয় অনলাইন পত্রিকায় আপনাকে স্বাগতম। সারাদেশে জেলা ও  উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহী হলে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করুন। হোয়াটসঅ্যাপ: ০১৮৮৩-৩০৬০৪৮

গাজার বুক থেকে রক্তে লেখা চিঠি – মোঃ আবিদুর রহমান

লেখক: মোঃ আবিদুর রহমান
  • প্রকাশিত: সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫

গাজার বুক থেকে রক্তে লেখা চিঠি


লেখক: মোঃ আবিদুর রহমান (স্বাধীন সূর্যোদয়)


আমি গাজা থেকে বলছি, রক্তাক্ত মাটির গভীরে দাঁড়িয়ে, যেখানে শিশুরা কাঁদে না শুধু মায়ের কোলে, কাঁদে মাটির নিচে নিঃশব্দ কবরে।পৃথিবী নাচে, হেসে উঠে ঝলমলে আলোয়,অথচ আমার আকাশ ফেটে পড়ে আগুনের রঙে কি দারুণ না অনুভূতি? 

তোমরা কি শুনছো না?


এই ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে থাকা আমাদের সন্তানের কান্না, এই যে ছিন্ন হাতগুলো এখনো “রাব্বানা আতিনা” বলে প্রার্থনা করছে

হ্যাঁ আমি সেই গাজা থেকে বলছি,

যেখানে মৃত্যু যেন বাতাসে ভেসে বেড়ায়, জীবন শুধু একটি অভিশপ্ত অপেক্ষা।

তোমরা জিজ্ঞেস করেছ কখনো কী চেয়েছিলে গাজা?

তাহলে আমরা বলতাম- একটু শান্তি, একটু আকাশ, একটুকরো স্বাধীন ভূমি, একটা তাজা রুটি, শিশুর মুখে একটি হাসি,

আর সবচেয়ে বেশি মুসলিম উম্মাহর ভ্রাতৃত্ব যা তোমরা দিতে পারনি হায় লজ্জা তোমাদের।

 

আজ কোথায় সেই কিবলার ওয়ারিশ জাতি?

যারা কাঁধে নিয়েছিল বদরের তলোয়ার?

আজ তারা কোথায়, যখন আমাদের সন্তানদের রক্তে আঁকা হচ্ছে আল-আকসার মিনার?

 

রাব্বুল আলামিন কোরআনে বলেছেন, 

 

وَإِنِ اسْتَنصَرُوكُمْ فِي الدِّينِ فَعَلَيْكُمُ النَّصْرُ

“তারা যদি তোমার কাছে সাহায্য চায় দ্বীনের ব্যাপারে, তবে তোমার দায়িত্ব তাদের সাহায্য করা।”

(সূরা আনফাল: ৭২)

তবে কোথায় আজ বিশ্ব মানবতা, বল কোথায় আজ মুসলিম উম্মাহ ভ্রাতৃত্ব? অথচ আমরা তো সিংগের জাতি ছিলাম তবে কোথায় আমাদের সেই গর্জন? কোথায় আমাদের সেই হারানো ঐতিহ্য?

 

হ্যাঁ আমিই সেই গাজা থেকে বলছি, যেখানে আমাদের কোনো মসজিদ নেই,সেগুলো আজ ধ্বংসাবশেষে রূপান্তরিত। তবুও আমরা রুকু করি ধুলোয়, সেজদা করি ছিন্ন গৃহপোড়ার উপর যেখানে আঁচড়ে পরে মিসাইল তবুও এই গর্জনমুখর ধ্বংসের মাঝেও আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহ এখনো আছেন তিনিই উত্তম পরিকল্পনাকারী। 

রাব্বুল আলামিন কোরআনের অন্যত্র বলেন, 

 

الَّذِينَ قَالَ لَهُمُ النَّاسُ إِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُوا لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إِيمَانًا

“যখন মানুষ বলল: শত্রুরা তোমাদের বিরুদ্ধে জমায়েত হয়েছে, তাদের ভয় করো। এতে তাদের ঈমান আরও বেড়ে গেলো।”

(সূরা আলে ইমরান: ১৭৩) 

 

আমরা ঘুমোই না ঘুম ভাঙে না মোয়াজ্জিনের আহ্বানে, ঘুম ভাঙে বিস্ফোরণের শব্দে,

আর তখনও আমরা ওজু করি কান্নায় রক্ত ভেজা পানি দিয়ে,কারণ আমাদের ইমান জীবিত।

 

আমরা বদর জানি, উহুদ জানি, কারবালা জানি

তোমরা কি তা ভুলে গেছো?

আর আমরা তা রক্ত দিয়ে লিখে রাখি প্রতিদিন।

আহ, আরব বিশ্ব লজ্জা তোমাদের উপর

তোমাদের কাছে কি আমরা এতটাই পরবাসী?

তোমাদের খুশির বেলুন উড়ে, আর আমাদের শিশু গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে মিসাইলে লাশ উড়ে ক্ষতবিক্ষত হয়ে আকাশে। কিন্তু কি মজার বিষয় জানো? তোমাদের বাজনার শব্দে ঢেকে যায় আমাদের মৃত্যুর আর্তনাদ,কি চমৎকার না?

 

হ্যাঁ আমিই গাজা থেকে বলছি শোন

আমরা ভেঙে যাইনি,ভয় পায়নি শুধু গড়েছি নতুন এক ইতিহাস, যেখানে প্রতিটি রক্তফোঁটা গড়িয়ে যাচ্ছে বেহেশতের দরজায়।

কেয়ামতের দিন সাক্ষ্য দিব

আমরা বলবো: হে রব!

তারা দেখেছিল,তবু নিরব ছিল। তারা মুসলিম ছিল নামে, কিন্তু হৃদয় ছিল বন্ধ তারা মুসলিম নামের কলঙ্ক আর আমরা রক্তে লিখেছিলাম আমাদের ঈমান। কেননা আপনি পবিত্র কোরআনে বলেছিলেন,

 

وَسَيَعْلَمُ الَّذِينَ ظَلَمُوا أَيَّ مُنقَلَبٍ يَنقَلِبُونَ

“আর যালেমরা খুব শিগগির জেনে যাবে— তারা কী পরিণতির দিকে ধাবিত হচ্ছিলো।”

(সূরা আশ-শোআ’রা: ২২৭)

 

হ্যাঁ, আমি সেই গাজা থেকে বলছি

এই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে, যেখানে ঘর নেই, মসজিদ নেই, খাবার নেই, পানি নেই, নেই নিরাপদ রাত

তবুও আমাদের হৃদয় ভরে আছে আকাশসম সাহস আর ঈমানের আগুনে। আমরা জানি, এই পৃথিবী আমাদের কান্নায় কান দেয় না, এই উম্মাহ আমাদের লাশ গুনে ক্লান্ত, এই আরবভূমি আমাদের রক্তে তেল মেখে উৎসবে মাতোয়ারা।

তবুও আমরা দমে যাই না। কারণ আমরা রক্ত দিয়ে লিখেছি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।”

আমরা জানি, বিজয় মাটিতে পড়ে থাকা আমাদের সন্তানদের লাশ নয় বিজয় তাদের স্বপ্নে ভরা দু’চোখে থাকা আল-আকসার শেষ দৃশ্য।

আমরা জানি, দুনিয়া আমাদের ভুলে যেতে পারে,

কিন্তু আকাশের মালিক আমাদের নাম একে রেখেছেন ফেরেশতার কলমে।আর কেয়ামতের দিন, সেই নাম উচ্চারিত হবে,

“এই সেই জাতি, যারা ধ্বংসের মধ্যেও মাথা নত করেনি,

এই সেই শিশুরা, যারা পাথর ছুঁড়ে ঈমান রক্ষা করেছিল,

এই সেই নারী, যারা সন্তান হারিয়েও বলেছিল— হে আল্লাহ, তুই যথেষ্ট।”

আর সেদিন হে নিরব মুসলিম বিশ্ব আমরা বলবো,

 

“হে রব তারা দেখেছিল, তারা শুনেছিল,তবুও তারা চুপ ছিল আর আমরা? আমরা তো রক্ত দিয়ে প্রমাণ করেছিলাম আমরাই ছিলাম তোমার পথের সত্যিকারের সৈনিক।”

 

তোমরা আমাদের ঈমান নিয়ে প্রশ্ন কর? শোনতে চাও আমাদের শেষ কথা?

আমরা থামবো না,আমরা কাঁপবো না,আমরা লড়বো ইনশাল্লাহ যতক্ষণ না আযান ফিরে আসে আল-আকসার মিনারে,

যতক্ষণ না প্রতিটি তাবু মসজিদে রূপ নেয়,

যতক্ষণ না বিজয়ের পতাকা উড়ায় গাজার শহীদ সন্তানেরা। হে বিশ্ব মুসলিম সেদিন তোমরা দেখবে

বিজয় আমাদেরই হবে ইনশাল্লাহ।

 

“হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল। ওয়া নিঅ’মাল মাওলা ওয়া নিঅ’মান নাসির।”

 

“আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট, তিনি আমাদের অভিভাবক, তিনিই সর্বোত্তম সাহায্যকারী।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  

[bangla_date]

© ২০২৪-২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | স্বাধীন সূর্যোদয় | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট