মহিবুল্লাহ মহিব তালা (ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি)
সাতক্ষীরা। ও সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার হাজরাকাটি এলাকায় ৫৮ বিঘা মৎস্য ঘের জোরপূর্বক দখল, চুক্তি অনুযায়ী হারির টাকা না দেওয়া এবং ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর ওপর সন্ত্রাসী হুমকির অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর)তালা উপজেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোঃ সেলিম হায়দার। তার সঙ্গে ছিলেন মোঃ ইমান আলী, মোঃ নজরুল ইসলাম ও কুমারেশ চন্দ্র খোকা।
তাঁরা জানান, হাজরাকাটি মৌজায় তাঁদের পৈত্রিক ও নিজ ক্রয়কৃত বৈধ কাগজপত্রভুক্ত ৫৮ বিঘা জমিতে দীর্ঘদিন ধরে মৎস্যচাষ করে আসছেন। ২০২৩ সালে চুক্তি অনুযায়ী জমিটি হারি ভিত্তিতে তুলে দেওয়া হলেও চুক্তিবদ্ধ ব্যক্তি ও তার সহযোগীরা জমি জোরপূর্বক দখল করে নেয় এবং চুক্তির ৮,৭০,০০০ টাকা পরিশোধ না করে প্রতারণা করে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, একই এলাকার মোঃ সাত্তার সরদার, মোঃ আরিজুল বিশ্বাস, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মিনহাজুল ইসলাম মনির ও মিনহাজুল ইসলাম মিনারসহ আরও ১০-১৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি এই দখল ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত। প্রতিপক্ষের লোকজন জমিতে সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে এবং তাদের হত্যা ও হামলার হুমকি দিচ্ছে।
সেলিম হায়দার বলেন, “আমরা তালা থানা, পুলিশ সুপার এবং সেনাবাহিনীর ক্যাম্প পর্যন্ত গিয়েছি। প্রতিবারই প্রতিপক্ষ আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত টাকা বা জমি ফেরত পাইনি। বরং আমাদের ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে হয়রানি করছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। জমির দখল হারিয়েছি, টাকা ফেরত পাইনি, আইনি প্রতিকারও মিলছে না।”
সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন:
১. ২০২৩ সালের চুক্তি অনুযায়ী ৮,৭০,০০০ টাকার হারির টাকা দ্রুত আদায়।
২. দখলকৃত ৫৮ বিঘা জমি দ্রুত ফেরত প্রদান।
৩. দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের মাধ্যমে তাঁরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের আহ্বান জানান এবং এই অন্যায়ের বিচার ও প্রতিকার চেয়ে সহযোগিতা কামনা করেন।
তালায় তরুণ কান্তি চক্রবর্তী গনেশের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন
তালা (সাতক্ষীরা) ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার তালা উপজেলা হরিশচন্দ্রকাটি গ্রামের তরুণ কান্তি গণেশ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শেখ বেলায়েত হোসেনের ছেলে মোঃ জোহুরুল ইসলাম।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকালে তালা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় এলাকার শতাধিক নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জোহুরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তরুণ কান্তি নিজেকে আইনজীবী সহকারী পরিচয় দিলেও তিনি আসলে মামলাবাজ, ধুরন্ধর ও কুচক্রী। তিনি কৌশলে নানা অসৎ কাজের সাথে জড়িত। তিনি বলেন, বিগত সরকারের পতনের প্রায় এক বছর আগে তরুণ কান্তি তার দলিলকৃত রেকর্ডীয় সম্পত্তি জবরদখল করেন। এসময় তিনি সাবেক ভূমি প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, তৎকালীন এসপি শ্যামল মুখার্জী ও সনৎ ঘোষকে আত্মীয় পরিচয় দিয়ে জমি দখলের পাঁয়তারা করেন।
জোহুরুল আরও জানান, আদালতে মামলা হলে তদন্ত ও রায়ে তার পক্ষে সিদ্ধান্ত আসে। কিন্তু জমি ফেরত পাওয়ার পরও তরুণ কান্তি নানা মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে ও তার বর্গচাষীদের হয়রানি করতে থাকেন। তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় সালিশে কোনো কাগজ দেখাতে না পেরে তরুণ কান্তি প্রকাশ্যে বলেন—“শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলে আবার জমি দখল করব।” এছাড়া আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিলেও তিনি মাত্র ৩ ভোট পান। বর্তমানে তিনি বিএনপি পরিচয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এসময় এলাকার আরও কয়েকজন ভুক্তভোগী বক্তব্য দেন। শহিদুল ইসলাম বলেন, উক্ত জমি হারি নিয়ে চাষ করি। কিন্তু জমিতে গেলে গণেশ বাহিনী আমাদের উপর হামলা করে। পরে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়। শরফুল গাজী জানান, আমাদের পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে কবরস্থান পর্যন্ত দখল করেছে। পুলিশ দিয়ে হয়রানি করেছে। এমনকি আমার পিতাকে মারধর করে পুলিশ দিয়ে ধরিয়েছে। এর পরপরই আমার পিতার মৃত্যু হয়। রিমা আক্তার বলেন, শত্রুতা করে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। কল্যাণী দাস অভিযোগ করেন, রফিকুল ইসলাম দাদাভাইয়ের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। অথচ তিনি সবসময় বিপদে আমাদের পাশে দাঁড়ান।
জোহুরুলের দাবি, তালার হরিশচন্দ্রকাটি মৌজার ১১১৯, ১১৩৩ ও ১১০৯ সাবেক দাগে ননী গোপাল, কৃষ্ণ গোপাল ও গৌরপদ গোপালের কাছ থেকে তার পিতা প্রায় ৫০ বছর আগে ১৫৫ শতক জমি ক্রয় করেন। সেই জমিই বর্তমানে তরুণ কান্তি অবৈধভাবে দখলের পাঁয়তারা করছেন। এসময় তিনি তরুণ কান্তি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।