মোহাম্মদ মামুন উদ্দিন( অনলাইন রিপোর্টার)
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবার চিত্র ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। উপজেলার একমাত্র ৫০ শয্যা হাসপাতালটি এখন চিকিৎসক সংকট, আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব এবং পর্যাপ্ত নার্সের ঘাটতিতে চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন অসংখ্য রোগী চিকিৎসা না পেয়ে মানবেতর পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন।
হাসপাতালে গাইনি সার্জন ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় গর্ভবতী মা ও নবজাতক সবচেয়ে করুণ পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন। অনেক সময় চিকিৎসক না থাকায় প্যারামেডিকেল কর্মীদের দিয়ে অস্ত্রোপচার করাতে হয়। এতে সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।
হাসপাতালে নেই আধুনিক অপারেশন থিয়েটার, আল্ট্রাসনোগ্রাম, এক্স-রে, প্যাথলজি টেস্টের পর্যাপ্ত সরঞ্জাম, এমনকি নেই লাইফ সাপোর্ট মেশিনও। অক্সিজেন সরবরাহ সীমিত। ফলে হার্টের রোগী, ফুসফুসের সমস্যা ও প্রসবজনিত জটিলতায় আক্রান্ত বহু মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন।
অবস্থা আরও জটিল করে তুলছে নৌপথের দুর্ভোগ।
বৈরি আবহাওয়ায় হাতিয়া থেকে জেলা সদরে যাতায়াত প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় দ্বীপবাসীর একমাত্র ভরসা হাতিয়া ৫০ শয্যা হাসপাতাল। অথচ এখানেই পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা নেই।
স্থানীয়রা দ্রুত এই হাসপাতালকে ১৫০ শয্যায় উন্নীত করা, সব চিকিৎসক পদে পূর্ণাঙ্গ নিয়োগ, গাইনি সার্জন ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পদায়ন, পর্যাপ্ত নার্স নিয়োগ এবং নিয়মিত মনিটরিংয়ের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে নৌ-অ্যাম্বুলেন্স, অতিরিক্ত স্থল অ্যাম্বুলেন্স, এবং আউটসোর্সিং খাতে পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ইমারজেন্সি এটেনডেন্ট, অফিস সহায়ক, ওয়ার্ডবয়, আয়া, সিকিউরিটি গার্ড ও টিকিট ক্লার্ক পদায়নও অত্যন্ত জরুরি বলে উল্লেখ করেন তারা।
এই দীর্ঘদিনের স্বাস্থ্য সংকটের সমাধানে হাতিয়া সম্মিলিত সামাজিক সংগঠন মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় নোয়াখালী সিভিল সার্জন অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছে। অবস্থানকারীরা জানান, সরকারের অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়া দ্বীপবাসীর জীবন আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। তাই স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।