
মোহাম্মদ মামুন উদ্দিন (হাতিয়া,নোয়াখালী) নোয়াখালীর
হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অসাধারণ রত্ন। যেখানে নদী, সমুদ্র ও সবুজ বনভূমি একসঙ্গে মিলেমিশে তৈরি করেছে এক অনন্য দৃশ্যপট। প্রতি বছর এখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটক ভ্রমণে আসে, প্রকৃতির সঙ্গে মিলিত হয়ে অবসরের আনন্দ নিতে।
নিঝুম দ্বীপের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো এর অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী। বিশাল সমুদ্রসৈকত, নরম বালু, মিঠা ও লবণাক্ত পানির সংমিশ্রণ, ঘন বনাঞ্চল ও ঝোপঝাড়ের মধ্যে বাস করা বন্যপ্রাণী এসব মিলিয়ে এখানে ভ্রমণকারীদের জন্য এক স্বপ্নময় পরিবেশ তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি ছোট ছোট গ্রামগুলো পর্যটকদের জন্য স্থানীয় সংস্কৃতি ও জীবনধারার এক নতুন অভিজ্ঞতা উপহার দেয়।
দ্বীপটি পরিবেশবান্ধব ভ্রমণের জন্যও পরিচিত। পর্যটকেরা নৌকা ভ্রমণ, মাছ ধরা, স্থানীয় খাবারের স্বাদ গ্রহণ, এবং সমুদ্রের ধারে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা উপভোগ করতে পারেন। এখানে পর্যটকরা শহরের কোলাহল থেকে দূরে, নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে ছুটি কাটাতে পারেন, যা মানসিক শান্তি ও আনন্দের একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন অনুভূতি প্রদান করে।
স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, “নিঝুম দ্বীপে পর্যটকের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। স্থানীয়রা হোমস্টে, নৌকা ভাড়া এবং স্থানীয় খাবারের মাধ্যমে পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা তৈরি করছে।” তবে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, পর্যটন বৃদ্ধি পেলে পরিবেশ ও প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন দ্বীপের সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
পর্যটন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নিঝুম দ্বীপকে সঠিক পরিকল্পনা ও টেকসই পর্যটন নীতি মেনে বিশ্বের পর্যটকদের কাছে পরিচিত করা সম্ভব। পর্যটকবান্ধব অবকাঠামো, নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং স্থানীয় জনগণকে পর্যটন কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করলে দ্বীপটি দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
এছাড়া, গবেষকরা বলেন, নিঝুম দ্বীপ শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই নয়, বরং গবেষণার জন্যও আকর্ষণীয়। এখানকার বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, বনভূমির জীবজন্তু এবং নদী-সাগরীয় পরিবেশ বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র।
নিঝুম দ্বীপ, নিঃসন্দেহে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, শান্তি এবং অনন্য অভিজ্ঞতার এক গন্তব্য, যেখানে প্রতিটি পর্যটক ফিরে আসে নতুন স্মৃতি ও আনন্দ নিয়ে। এটি পর্যটকদের জন্য এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা এবং নোয়াখালীর পর্যটন সম্ভাবনার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।