
মোঃ সোলায়মান গনি স্টাফ রিপোর্টার | কুড়িগ্রাম
উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। আজ ভোরে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ঘন কুয়াশা, হিমেল বাতাস ও সূর্যের অনুপস্থিতিতে কনকনে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে সর্বত্র। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নদীঘেঁষা চরাঞ্চলের মানুষ।
ভোর থেকেই কুড়িগ্রাম সদরসহ উলিপুর, রাজারহাট, চিলমারী ও রৌমারী উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা কুয়াশায় ঢেকে থাকে। অনেক এলাকায় দুপুর গড়িয়েও সূর্যের দেখা মেলেনি। ফলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। শীতের কারণে দিনমজুর, রিকশাচালক ও কৃষিশ্রমিকরা কাজে যেতে পারছেন না। আয়ের পথ বন্ধ হয়ে পড়ায় নিম্নআয়ের পরিবারগুলো চরম সংকটে পড়েছে।
চরাঞ্চলে শীতের প্রভাব আরও ভয়াবহ। খোলা মাঠ ও নদীর পাড়ে হিমেল বাতাসের তীব্রতা বেশি হওয়ায় কাঁচা ঘরবাড়িতে বসবাসকারীরা অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে। অনেক পরিবার খড়কুটো ও কাঠ জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে বাধ্য হচ্ছে।
শীতের প্রকোপে জেলার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে সর্দি-কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। চিকিৎসকরা শিশু ও বয়স্কদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন।
ঘন কুয়াশার কারণে সড়ক-মহাসড়কে যান চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে। ভোরের দিকে কুড়িগ্রাম-রংপুরসহ আঞ্চলিক সড়কগুলোতে যানবাহন ধীরগতিতে চলাচল করতে দেখা গেছে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাস অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে শীত মোকাবিলায় জেলায় শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। দ্রুত চরাঞ্চলসহ দুর্গম এলাকায় কম্বল ও ত্রাণ সহায়তা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল।