মোহাম্মদ মামুন উদ্দিন (অনলাইন রিপোর্টার)
নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীতে এক বিয়ের আসর থেকে বরসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। যদিও পুলিশ দাবি করেছে, তারা কাউকে আটক করেনি বরং পরিস্থিতি বিবেচনায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বর-কনে পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলে মাইজদীর মেহেরান ডাইন রেস্টুরেন্টে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার কেন্দ্রে থাকা বর ইকবাল হোসেন (৩৬) পেশায় একজন ড্রাগ সুপার এবং নোয়াখালীতেই কর্মরত। তার বাড়ি ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলায়। অপরদিকে, কনে একজন অনার্স পড়ুয়া ছাত্রী, যার বাবা কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। কনের বাড়ি জেলার কবিরহাট উপজেলায় এবং মামারাই তার বিয়ের আয়োজন করছিলেন।
কনের মামা মো. হিরণ অভিযোগ করে বলেন, “গত ৯ মে ইকবাল হোসেনের সঙ্গে আমার ভাগ্নির এনগেজমেন্ট হয়। এরপর ১৫ মে রাতে বর পক্ষ আমাদের বাড়িতে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। ১৬ মে নির্ধারিত দিন দুপুর ১২টার দিকে বর হঠাৎ ফোন করে জানায়, সে বিয়েতে আসবে না। আমরা কারণ জানতে চাইলে বর পক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করা হয়।”
তিনি আরও জানান, বিয়ের অনুষ্ঠান মেহরান ডাইনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কনে পক্ষ প্রায় ৩০০ অতিথির জন্য খাবারের আয়োজন করে। কিন্তু বর সেজে না এসে সাধারণ পোশাকে একটি কক্ষে আত্মগোপন করে। একপর্যায়ে কনে পক্ষের লোকজন বরের অবস্থান নিশ্চিত হলে তার কাছে কৈফিয়ত চায়। তখন বর জানায়, সে ৫০ লক্ষ টাকা না পেলে বিয়ে করবে না এবং কক্ষ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় উত্তেজনা, যা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। বরের পক্ষ থেকে কনের লোকজনের ওপর হামলার অভিযোগও রয়েছে। পরে স্থানীয়রা এবং কনে পক্ষের লোকজন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চায়। পুলিশ এসে বরসহ দুইজনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
অন্যদিকে, বর ইকবালের ভাই সোহরাব হোসেন বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, “এটি মেয়ের পারিবারিক একটি বিষয়। আমার ভাই পালিয়ে যায়নি, ৫০ লক্ষ টাকা যৌতুকও দাবি করেনি। এখন উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে।”
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, “বিয়ের অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি এবং মতবিরোধের সৃষ্টি হয়। আমরা ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে দ্রুত গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি এবং বরসহ দুজনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। যৌতুক দাবির অভিযোগ এখনো যাচাই করে দেখা হচ্ছে।”