মোঃ আবু তৈয়ব, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম, ( প্রতিনিধি) :
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়ণহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় কেউই পাস করেনি। দু’জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করলেও ফলাফল শুনে হতবাক হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা, শিক্ষক সংকট ও শিক্ষার নিম্নমান নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে।
ফটিকছড়ি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার ৫৯টি বিদ্যালয় এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে শিক্ষার্থী সংখ্যায় সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা প্রতিষ্ঠান হলো নারায়ণহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এখান থেকে মাত্র দুইজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে দুজনেই ফেল করেছে।
একাধিকবার চেষ্টা করেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে কথা হয়েছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শওকত হোসেন সিকদারের সঙ্গে। তিনি বলেন এই স্কুল ২৫ বছর ধরে এমপিওভুক্ত নয়। আমি নিজেই পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের খরচ দিয়েছি। পাস না করাটা দুঃখজনক। এখানে যারা পড়ে, তারা খুবই অসহায় পরিবারের সন্তান। তাঁর দাবি, বর্তমানে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয়ে ১৭০ জন শিক্ষার্থী এবং ৭ জন শিক্ষক রয়েছেন। কাগজে-কলমে শিক্ষক, বাস্তবে সংকট।
তবে এই শিক্ষক সংখ্যা নিয়েও রয়েছে বির্তক। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম বলেন আমি নিজে একাধিকবার বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছি। সেভাবে কোনো শিক্ষক পাইনি। মাত্র একজন প্রধান শিক্ষক যিনি প্রায় ৭০ বছর বয়স তাঁর ওপর পুরো বিদ্যালয়ের দায়িত্ব। বাস্তবে ৭ জন শিক্ষক নেই। ধারণা করি, এমপিওর জন্য কাগজে সংখ্যা বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে।”
এ বিষয়ে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত না হলেও সরকারি বই পায়। শিক্ষক থাকার পরও মাত্র দুজন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে এবং দুজনই ফেল করেছে—এটি মেনে নেওয়া যায় না। প্রয়োজনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অনেকে বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে সঠিক পাঠদান হয় না।
একজন অভিভাবক বলেন মেয়েরা স্কুলে গেলেও অনেক দিন শিক্ষক থাকেন না। বই তো থাকে, কিন্তু পড়ানোর কেউ নেই। তাই এই ফলাফল অপ্রত্যাশিত নয়।
অবিলম্বে তদন্ত, কাঠামোগত পুনর্বিন্যাস ও শিক্ষার মানোন্নয়নের উদ্যোগ না নিলে বিদ্যালয়টি পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।