বিশেষ প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলাধীন ১নং কুড়ালিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বানিয়াবাড়ী গ্রামে একজন অসহায় বৃদ্ধা নারীর জমি দখল করে জোরপূর্বক বসতবাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার বিরুদ্ধে। জমির প্রকৃত মালিক মৃত মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী মোছাঃ হাজরা বেগম (৭০) অভিযোগ করেন, তাঁর দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় ও রেকর্ডভুক্ত সম্পত্তি এখন প্রভাবশালীদের হিংস্র থাবায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বানিয়াবাড়ী গ্রামের হলুদিয়া মৌজার ৭৫০ খতিয়ানের ১৪৩ দাগভুক্ত ৩৩ শতক জমি বহু বছর ধরে হাজরা বেগম ও তার পরিবার ভোগদখল করে আসছিলেন। জমিটির মালিকানা সংক্রান্ত কাগজপত্র ও দলিলপত্র তাদের নামে বৈধভাবে প্রাপ্ত রয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি এবং রাজনৈতিক প্রভাবশালী চক্রের যোগসাজশে আওয়ামী লীগের এক নিষিদ্ধ ঘোষিত নেতা মোঃ গফুর ও তার সহযোগী আব্দুস সামাদ গং ওই জমির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ—যা পাকা রাস্তার সংলগ্ন—জোরপূর্বক দখল করে সেখানে বসতবাড়ি নির্মাণ শুরু করে।
বৃদ্ধা হাজরা বেগম এর পরিমাণগন জানান,- অত্যন্ত অসহায় মানুষ। বাবা ও মা মারা যাওয়ার পর আমরা ছেলেমেয়েদের নিয়ে কোনো মতে এই জমিতে বসবাস করে দিন কাটাই। হঠাৎ করে গফুর ও তার লোকজন এসে রাস্তার পাশে জমি দখল করে। প্রতিবাদ করলেই হুমকি দেয়, ‘ ইতিপূর্বে আমার বৃদ্ধা বলে তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি শারীরিকভাবে তকে আক্রমণ করা হয়েছে ।’ এখন দিনরাত আতঙ্কে থাকি।
পরিবারটি জমির দখল ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হলে দখলদার গোষ্ঠী উল্টো হয়রানিমূলক একের পর এক মামলা দিয়ে হাজরা বেগমের পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এমনকি একাধিকবার শারীরিক হুমকি, প্রাণনাশের ভয় ও সামাজিকভাবে অপমান করার চেষ্টাও করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আমাদের জমি ফিরে পেতে কোথাও অভিযোগ করলে, তারা রাতের আধারে দেশী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বসে থাকে। রান্না সের হুমকি দেয়।
পরিবারটি জানায়, ২০২৪ সালের ২৪শে অক্টোবর স্থানীয়দের প্রতিবাদে দখল কার্যক্রম একবার বন্ধ হলেও সম্প্রতি ফের জমিতে নির্মাণ কাজ শুরু করেছে দখলদাররা।
বর্তমানে হাজরা বেগম ও তার পরিবার মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিনযাপন করছে। ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে, রাতে ঘুমাতে পারছেন না বাড়ির সদস্যরা। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ জানালেও এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে তারা দাবি করেন।
অসহায় এই বৃদ্ধা নারী এবং তার পরিবার মানবাধিকার সংস্থা, উপজেলা প্রশাসন, ভূমি অফিস, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সমাজের সচেতন ব্যক্তি ও গণমাধ্যমের প্রতি একটি মানবিক আবেদন জানিয়েছেন-আমাদের জমি যেন রক্ষা করা হয়, দখলদারদের হাত থেকে বাঁচানো হয়। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বাঁচতে চাই, আতঙ্ক নয়।
সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান
উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ,মধুপুর থানা প্রশাসন,
টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন,
মানবাধিকার কমিশন সচেতন নাগরিক সমাজ ও সংবাদমাধ্যম
উক্ত ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছে এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার।