শেখ মহিউদ্দিন (বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি)
সুন্দরবন থেকে হরিণের মাংস ও কাঁকড়াসহ ৮ শিকারি আটক
আটককৃতরা ও জব্দকৃত সরহ্জাম
সুন্দরবনের হাড়বাড়ীয়া এলাকা থেকে হরিণের মাংস ও কাঁকড়াসহ আট হরিণ শিকারিকে আটক করেছে মোংলা কোস্ট গার্ড। আটককৃতদের বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন মো. ইয়াসিন (২৮), শরিফুল ইসলাম (৩৫), মোস্তফা শেখ (৪৫), ইউনুস শেখ (৩৮), ফারুক মোল্লা (৪২), মো. শফিকুল হাওলাদার (৩৯), রবিউল (৩২) ও এনামুল শেখ (৩৭)। তারা সবাই উপজেলার চিলা ইউনিয়নের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা (ঢাকা) লেফটেন্যান্ট রাফিদ-আস-সামি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় সুন্দরবনের হাড়বাড়ীয়ার দিঘির খাল সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালান কোস্ট গার্ড সদস্যরা। এ সময় অভিযানকারীরা ওই এলাকা থেকে সাড়ে ১৩ কেজি হরিণের মাংস, একটি হরিণের মাথা, চারটি পা, একটি হরিণ ধরার ফাঁদ, জাল, ১৮ কেজি অবৈধ কাঁকড়া, পাঁচ লিটার বিষ (কীটনাশক) ও দুটি নৌকা জব্দ করেন।
এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে হরিণ ও অবৈধ কাঁকড়া শিকারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আটজন হরিণ শিকারিকে আটক করা হয়। আটককৃতরা বর্তমান সুন্দরবনের নিষিদ্ধ সময়ে অবৈধভাবে বনে প্রবেশ করে মাছ ও কাঁকড়া শিকার করছিলেন বলে জানায় কোস্ট গার্ড। জব্দকৃত হরিণের মাংস, কাঁকড়া, বিষ, ফাঁদ, জাল ও নৌকাসহ আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বৃহস্পতিবার রাতেই বনবিভাগের চাঁদপাই ফরেস্ট অফিসে হস্তান্তর করেছে কোস্ট গার্ড।
কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা রাফিদ-আস-সামি বলেন, বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচার রোধের মাধ্যমে সুন্দরবনকে রঙিন রাখার লক্ষ্যে কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরণের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
উল্লেখ্য, গত ১ জুন থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে মাছ-কাঁকড়াসহ সব ধরণের বনজ সম্পদ আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বনবিভাগ। এই সময়ে বনে প্রবেশের অনুমতি নেই জেলে-বাওয়ালী ও পর্যটকদের। সময়টা মূলত বনের উদ্ভিদ, জলজ প্রাণী ও বন্যপ্রাণীর প্রজনন মৌসুম। তাই প্রজনন মৌসুম নির্বিঘ্ন করতেই বনবিভাগের তিন মাসের এই নিষেধাজ্ঞা।
এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্ত দল সুন্দরবনে প্রবেশ করে বিষ দিয়ে মাছ শিকার, ফাঁদ পেতে হরিণ নিধন, কাঁকড়া আহরণসহ বনজ সম্পদ পাচার ও ধ্বংসে লিপ্ত থাকে। তবে বিভিন্ন সময়ে ধরা পড়া দুর্বৃত্তদের দাবি, তারা বনবিভাগের কতিপয়
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ম্যানেজ করেই বনে প্রবেশ করে থাকেন। আর বনবিভাগের দাবি, তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বনে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা।