মুহাম্মাদ রাকিব, সদর প্রতিনিধি
পটুয়াখালী সদর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে প্রায় দুই শতাধিক ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা।
সদর হাসপাতালে রিপ্রেজেন্টেটিভদের চাপে চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন তাদের দেখাতে বাধ্য করায় এখন গলার কাঁটা বলে মনে করছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। প্রেসক্রিপশন দেখে নেওয়ায় রোগীদের গোপনীয়তা রক্ষা হচ্ছে না।এতে হাসপাতালে চিকিৎসার পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোসহ মোবাইল কোর্টের আওতায় চান সচেতনরা।
রবিবার জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা সদরের বেশ কয়েকটি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে জোট বেঁধে দাঁড়িয়ে আছেন। তারা সংখ্যায় কমপক্ষে ১৫-২০ জন। তাদের হাতে ও কাঁধে ব্যাগ ঝোলানো আছে ব্রিফকেসের ভিতরে চিকিৎসকদের জন্য আনা নানা উপহার সামগ্রী।
ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, ক্লিনিকের মালিক, চিকিৎসক এবং ওয়ার্ড বয় থেকে শুরু করে কর্মচারীদের সঙ্গে তাদের গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তাদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা ও উপহার সামগ্রী নিয়ে ডাক্তাররা নিম্নমানের এবং বিনা কারণে বাড়তি ওষুধ লিখে থাকেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। কোনো রোগী ও তাদের স্বজনরা চিকিৎসকদের চেম্বার থেকে বের হতেই হাসপাতাল/ক্লিনিক/ডায়াগনস্টিকে তাদের ঘিরে ধরে মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভরা। তাদের নানারকম প্রশ্নে রোগী ও স্বজনরা হন বিব্রত। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালসহ জেলা সদরের হেভেন কেয়ার ক্লিনিক , পানামা ডায়গনেষ্টিক সেন্টার , প্রাইম ক্লিনিক, ডক্টর পয়েন্টস সহ বেশ কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক ঘুরে দেখা গেছে একই চিত্র।
এসব হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা জেলা শহরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার তিন-চার জন পুরুষ ও মহিলা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, তারা শারীরিক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন। হাসপাতালের চিকিৎসকের ঘর থেকে ওষধ বিতরণ স্থানের গেটে বের হতেই বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির ১৫-২০জন প্রতিনিধি বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে রোগীদের প্রেসক্রিপশন নিয়ে ছবি তুলে তাদের নানারকম প্রশ্ন করতে থাকে। এতে তারা বিব্রত হন এবং তাদের এখন গলার কাঁটা। পটুয়াখালী সদর হাসপাতালের প্রধান গেট ও টিকিট ক্রয় কেন্দ্র থেকে অটো গাড়িতে উঠা পর্যন্ত এবং বিভিন্ন ক্লিনিক তারা ৩-৪টি গ্রুপের নানা ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হন বলে অভিযোগ করেন।
সাংবাদিকের পরিচয় গোপন রেখে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের পুরাতন টিকিট ক্রয় কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ওষুধ কোম্পানির ১৫-২০ জন মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভের সকাল ১১টায় ছবি তুলতে লাগলে এবং নাম পরিচয় জানার চেষ্টা করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। শীর্ঘই এ অবস্থা থেকে রেহাই চান পটুয়াখালীর রোগীসহ তাদের স্বজনরা ।