আসাদুজ্জামান,প্রতিনিধি, (কুড়িগ্রাম)
১৯.৯.২৫ রৌমারীতে পরিদর্শণের একদিন পরেই খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর পচাঁ চাউলের প্রমাণ মিললো খাদ্যগুদামে। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে পচাঁ চাল ভর্তি ট্রাক্টর গাড়ি ২টি রৌমারী খাদ্যগুদামের সামনে বের হওয়ার সময় আটক করে স্থানীয় কিছু জনতা।
স্থানীয় ও ডিলার সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের আনন্দ বাজার কেন্দ্রের ডিলার মনির হোসেন সরকারি আদেশ (জিও লেটার) অনুযায়ী যাতায়াতের সুবিধার্থে উলিপুরের পরিবর্তে রৌমারী খাদ্যগুদাম থেকে খাদ্যবান্ধব কার্ডধারী ৫৩৩ জনের বিপরীতে প্রায় ১৬ মে.টন চাল উত্তোলন করা হয়। এসময় ডিলার মনির হোসেন পচাঁ চাউলের বস্তা গুলো খাওয়ার অনুপযোগী বলে প্রতিবাদ করেন। প্রতিবাদে কোন কাজ না হওয়ায় ২টি ট্রাক্টর বোঝাই চাউল নিয়ে যাওয়ার চর শৌলমারীর উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খাদ্যগুদামের গেটের সামনে স্থানীয় কিছু জনতা গাড়ি দুটি আটক করে। খবরটি মুহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে রৌমারী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ন আহ্বায়ক রাজু আহমেদসহ স্থানীয় জনতা পচাঁ ও খাবার অনুপযোগী চাউল দেখতে পায়। বিষয়টি জেলা প্রশাসক, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে। এক পর্যায়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আদেশক্রমে চাউল বোঝাই গাড়ি দুটি উপজেলা পরিষদেও সামনে নেওয়া চত্বরে হয়। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা খাদ্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানান।
উল্লেখ্য যে, বহুল আলোচিত, বিতর্কিত, ঘুষবানিজ্য, অর্থ আত্মসাতকারী, জালিয়াতির কারিগড় ও একাধীক মামলার আসামী খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা মুহাম্মদ শীহদুল্লাহ রৌমারী খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার হিসেবে যোগদানের পর তিনি মিলার, ডিলার ও ঠিকাদারের কাছ থেকে নানা অজু হাতে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এছাড়াও স্বেচ্ছাচারিতা ও অসৌজন্যমূলক আচরনসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। এসব অপকর্মের চিত্র তুলে ধরে ৩৪ জন মিলার, ১৯ জন ঠিকাদার, কয়েকজন কৃষক ও দুইজন ব্যবসায়ী পৃথক পৃথক দুর্নীতি দমন কমিশন ও মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে চাতাল মালিক নাসির উদ্দিন লাল ও ব্যবসায়ী নাহিদ হোসেন বাদী হয়ে কুড়িগ্রাম কোর্টে মামলা দায়ের করেন যা বিচারাধীনে রয়েছে। এনিয়ে দৈনিক জবাবদিহি পত্রিকাসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্্র মিডিয়ায় ঢালাও ভাবে প্রচার করা হয়।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এ রৌমারীতে অনিয়ম দুর্নীতি করে যাচ্ছে। আমি এতোদিন শুধু শুনে গেছি। আজ হাতে নাতে ধরে দেখতে পেলাম খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ একজন দুর্নীতিবাজ। তার এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রশাসনের নিকট তদন্ত পূর্বক আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহন করা হউক।
ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর ব্যবহৃত ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু হাসনাত মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আমার অজান্তে যোগদানের পর থেকে এমন ব্যবসা করে যাচ্ছে। সে বদলিও হয়েছেন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জল কুমার হালদার বলেন, আমি একাধীকবার তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বিভিন্ন অজুহাতে পাশ কাটিয়ে যান। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
আসাদুজ্জামান, জেলা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম
০১৭১৮৬৮৫৪০৮