মোঃ রাকিব হাসান পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি
পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়া উপজেলার ৬নং ভজনপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বগুলাহাগী গ্রামের ৮ বছরের নিষ্পাপ শিশু মোছা. আসিয়া আক্তার কিডনি জনিত জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী। ছোট্ট বয়সে প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হয়ে আসিয়ার স্বাভাবিক শৈশব হারিয়ে গেছে। প্রতিদিনই তার শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছে। চিকিৎসকের মতে, তার উন্নত চিকিৎসা ছাড়া বাঁচানো সম্ভব নয়। কিন্তু পরিবারের দারিদ্র্যতার কারণে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরের নির্দেশে তাৎক্ষণিক উদ্যোগ
বিষয়টি অবগত হন পঞ্চগড়-১ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ব্যারিস্টার নওশাদ জমির। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে শিশুটির খোঁজখবর নিতে নির্দেশ দেন। এরপর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতারা একযোগে শিশুটির পাশে দাঁড়ান।
পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা
বৃহস্পতিবার বেলা বারোটার দিকে সরাসরি শিশুটির বাড়িতে উপস্থিত হয়ে তার খোঁজখবর নেন এবং উন্নত চিকিৎসার আশ্বাস দেন নেতৃবৃন্দ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন—
ভজনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুসলিম উদ্দিন উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ছাত্রনেতা হামিদুল হাসান লাবু উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জাকির হোসেন দেবনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা ভজনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান মেম্বার শামসুল হক সরকার ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মকবুল হোসেন বাঙালি মেম্বারউপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব তাজুল ইসলামউপজেলা তাঁতি দলের সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন হোসেন এছাড়াও ভজনপুর ইউনিয়নের বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় নেতৃবৃন্দ বলেন,
রাজনীতি মানুষের কল্যাণের জন্য, আর আসিয়ার মতো অসহায় এক শিশুর জীবনের প্রশ্নে আমাদের একসাথে এগিয়ে আসা উচিত। মানবিক কারণে সবাইকে পাশে দাঁড়াতে হবে।”
উপস্থিত যুবদল নেতা হামিদুল হাসান লাবু বলেন,
একটি নিষ্পাপ শিশুর জীবন এখন সংকটের মুখে। আমরা শুধু রাজনৈতিক নেতা নই, এলাকার সন্তান হিসেবেও আমাদের দায়িত্ব এই শিশুটির পাশে দাঁড়ানো।”
ভজনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুসলিম উদ্দিন বলেন,
আমরা চেষ্টা করছি স্থানীয়ভাবে তহবিল সংগ্রহ করার। তবে বড় অঙ্কের সহায়তা ছাড়া উন্নত চিকিৎসা সম্ভব নয়। তাই সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে।”
শিশু আসিয়ার বাড়িতে নেতৃবৃন্দ পৌঁছালে গ্রামের মানুষজন ভিড় করেন। অনেকে চোখের পানি ফেলেন। এলাকাবাসীরা জানান, আসিয়ার পরিবার অতি দরিদ্র। তার বাবা দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন, যা দিয়ে সংসার চালানোই কষ্টকর। শিশুটির চিকিৎসা খরচ বহন করা তাদের পক্ষে অসম্ভব।
একজন প্রতিবেশী আবেগপ্রবণ কণ্ঠে বলেন—
আসিয়ার মতো ছোট একটি মেয়ে মৃত্যুর সাথে লড়ছে। আমরা চাই, সমাজের বিত্তবানরা ও রাজনৈতিক নেতারা একসাথে তাকে সাহায্য করুক।”
ডাক্তারদের মন্তব্য
স্থানীয় চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আসিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় কিডনি বিশেষজ্ঞ হাসপাতালে ভর্তি করানো জরুরি। নিয়মিত ডায়ালাইসিসসহ দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া ছাড়া তার জীবন রক্ষা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন কয়েক লক্ষ টাকার ব্যয়ভার, যা একটি দরিদ্র পরিবারের পক্ষে অসম্ভব।
সাহায্যের আহ্বান
এলাকাবাসী, নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজ একমত হয়েছেন যে, শিশুটির জীবন বাঁচাতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। বিত্তবান ব্যক্তি, প্রবাসী, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সকলের সহায়তা এখন সময়ের দাবি।
সভা শেষে শিশুটির আরোগ্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী আসিয়ার দ্রুত সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন।