
মোহাম্মদ মামুন উদ্দিন (অনলাইন রিপোর্টার)
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে শাপলা কলি প্রতীকের সংসদ সদস্য প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে ‘রুপক নন্দী’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া একটি পোস্টে আব্দুল হান্নান মাসউদকে হাতিয়ায় নিষিদ্ধ করার হুমকির পাশাপাশি ভয়াবহ পরিণতির সতর্কবার্তা দেওয়া হয়।
ভাইরাল হওয়া ওই পোস্টে সরাসরি আব্দুল হান্নান মাসউদকে উদ্দেশ করে লেখা হয়
“হান্নান, আগুন নিয়ে খেলা করো না। পরে পস্তাতে হবে বলে দিলাম।
পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদ (পিচ্চি আজাদ)-কে যারা ভালোবাসেন, তারা হান্নান মাসউদকে ছাড় দেবেন না। এমনকি হালিম আজাদকে গ্রেপ্তার করা হলে হান্নান মাসউদকে হাতিয়ায় নিষিদ্ধ করার ঘোষণাও দেওয়া হয়।
এদিকে একই সময় সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদের ছেলে ইসরাত রায়হান অমি জনৈক এনসিপি কর্মীকে মেসেঞ্জারে চরম উসকানিমূলক বার্তা পাঠান বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই বার্তায় তিনি লেখেন, আব্দুল হালিম আজাদকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হলে হান্নান মাসউদ ও তানভীরসহ অন্যান্য নেতাদের হাতিয়ার উত্তর অঞ্চলে চলাচল ‘হারাম’ করে দেওয়া হবে। বার্তায় আরও বলা হয়, তাদের নেতা-কর্মীরা সরাসরি প্রতিপক্ষকে ‘গিলে ফেলবে’।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাতিয়ার রাজনীতিতে আব্দুল হালিম আজাদ সম্প্রতি সরকার গঠনে সম্ভাবনাময় একটি দলের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এনসিপি প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদের সমর্থকদের সঙ্গে তার অনুসারীদের মধ্যে এক ধরনের স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয়। সম্প্রতি আব্দুল হালিম আজাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লে তার অনুসারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং এর দায় এনসিপি প্রার্থী হান্নান মাসউদের ওপর চাপিয়ে এ ধরনের হুমকি দিতে শুরু করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এই ঘটনায় হাতিয়ার সাধারণ ভোটার ও এনসিপি সমর্থকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভোটার বলেন,
“নির্বাচনের আগে একজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে এভাবে হত্যার হুমকি দেওয়া গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।”
এ বিষয়ে এনসিপি প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন,
“আমি এসব হুমকিতে মোটেও শঙ্কিত নই। জুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার গুলির মুখেও আমরা ভয় পাইনি। সেখানে এসব সন্ত্রাসীদের তোয়াক্কা করার প্রশ্নই আসে না। প্রশাসন শুরু থেকেই কঠোর হলে তারা এত বড় সাহস পেত না। আজ জুলাই অভ্যুত্থানের একজন নেতা হাদি হত্যার শিকার হয়েছেন—এটি গভীর উদ্বেগের বিষয়।”
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন,
এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।”