সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ১২:২২ পূর্বাহ্ন
মোঃ আরাফাত আলী (নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি): নওগাঁয় জায়গা জমি ও রাজনৈতিক বিরোধের জেরে তিন সহোদর ভাইসহ বিএনপির চার নেতাকর্মী সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহতের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আব্দুল মজিদ (৫০) নামে এক যুবদল নেতা ২১ দিন পর মারা গেছেন। নিহত আব্দুল মজিদ সাহাপুর গ্রামের আফজাল হেসেনের ছেলে।
সোমবার (২৫নভেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে আব্দুল মজিদ তার নিজ বাড়ি নওগাঁ সদরের সাহাপুর গ্রামে মারা যান। মঙ্গলবার(২৬নভেম্বর) সকালে পুলিশ আব্দুল মজিদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছেন।
গত ২রা নভেম্বর রাত ১০ টার দিকে শহরের ইয়াদ আলীর মোড় এলাকায় ওই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় শাটারগান ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। এবং আরিফ দেওয়ান সহ এজাহারভুক্ত ৪জনকে গ্রেফতার করেছে।
নওগাঁ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বোয়ালিয়া ইউনিয়নের সাহাপুর এলাকায় মোহাম্মদ আলী নামে আওয়ামী লীগের এক ক্যাডারের অবৈধ দখলে থাকা এক জমি উদ্ধার কে কেন্দ্র করে জেলা যুবদলের সাবেক সদস্য আব্দুল মজিদের সাথে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার জেরে গত ২নভেম্বর রাতে বোয়ালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে মোটরসাইকেল যোগে ৩ জনকে সঙ্গে নিয়ে আব্দুল মজিদের উপর হামলার উদ্দেশ্যে আসেন মোহাম্মদ আলী। আব্দুল মজিদকে দেখা মাত্রই আকস্মিক তার বাম কাঁধে গুলি করেন মোহাম্মদ আলী। তাৎক্ষণিক আব্দুল মজিদের দুই ভাই কাবিল হোসেন ও শফিকুল ইসলাম এগিয়ে আসলে তিন ভাইকেই রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ী কুপিয়ে পালানোর চেষ্টা করে হামলাকারীরা। ওই মুহুর্তে হামলাকারীদের বাঁধা দিতে গেলে কুপিয়ে আহত করা হয় স্থানীয় বিএনপি নেতা সুবিদ আলীকেও। এরপর স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা মোটরসাইকেল ও হামলায় ব্যবহৃত দেশি পিস্তল ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
আব্দুল মজিদের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাকে দেখার জন্য হাসপাতালে ছুটে আসেন জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু , সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশ, নওগাঁ জজ আদালতের পিপি এ জেড এম রফিকুল আলম সহ অসংখ্য নেতাকর্মী।
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি নুরে আলম সিদ্দিকী জানান, ঘটনার পর আহতদের উদ্ধার করে নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে আশঙ্কাজনক অবস্থ্যায় আব্দুল মজিদসহ তার দুই ভাই কাবিল হোসেন (৩০) ও শফিকুল ইসলাম (৪৮)’কে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে আব্দুল মজিদ গত শনিবার তার বাড়িতে আসেন। বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নেয়া অবস্থায় সোমবার অসুস্থ হয়ে নিজ বাড়িতে মারা যান আব্দুল মজিদ। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে গুলিবিদ্ধ অথবা হামলার কারনে মৃত্যুর বিষয়টি উল্লেখ করা হলে এটি হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহনের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে। এই হামলার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে এজারহারভূক্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
