ব্রাজিল বাংলাদেশের বাজারে গরুর মাংস রপ্তানির বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়ে আসলেও প্রশাসনিক জটিলতা ও প্রয়োজনীয় সনদপত্রের অভাবে এই উদ্যোগটি বাস্তবায়ন হয়নি। ঢাকায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, তার দেশ বিশ্বের শীর্ষ গরু ও পোলট্রি মাংস উৎপাদনকারী। অনেক মুসলিমপ্রধান দেশে ব্রাজিলের মাংস আমদানি অনুমোদিত থাকলেও বাংলাদেশে অনুমতি পেতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে গরুর মাংস রপ্তানি নিয়ে ২০২৩ সালের এপ্রিলে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়, যেখানে প্রতি কেজি মাংস ৪৯৫ টাকায় সরবরাহের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তখন ঢাকার বাজারে মাংসের দাম ছিল ৮০০ টাকা কেজি। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হয়নি।
রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে অনুমতি পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করতে হয়েছে। একাধিক নীতিমালার জটিলতার কারণে বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন। তবে তিনি আশাবাদী যে ভবিষ্যতে এ সমস্যার সমাধান হবে।
এছাড়া, ব্রাজিল কৃষি, ওষুধশিল্প ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। কৃষি ক্ষেত্রে প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং অভিজ্ঞতা ভাগাভাগির মাধ্যমে বাংলাদেশের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি সম্ভব বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরও বলেন, ব্রাজিলের একটি গরু দিনে ৪৫ কেজি দুধ উৎপাদন করে, যা বাংলাদেশের গরুর তুলনায় অনেক বেশি। এই প্রযুক্তি স্থানান্তর বাংলাদেশে দুধ ও মাংসের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করবে।
ওষুধ শিল্পে বাংলাদেশের জন্য ব্রাজিলে রপ্তানির সুযোগ রয়েছে, কারণ দেশটির সরকার স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রচুর ওষুধ কেনে। তবে এই খাতেও সনদপত্রের জটিলতা বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
রাষ্ট্রদূত জোর দেন যে শুধু সরকারি নয়, বেসরকারি খাতকেও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে।