রমজান মাসে সাধারণ মানুষের খাদ্য ব্যয়ের চাপ কমাতে সরকার ২৫টি নির্ধারিত স্থানে সুলভ মূল্যে প্রাণিজাত পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। ২৮ রমজান পর্যন্ত চলমান এ কার্যক্রমে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সেইসব স্থান বেছে নেওয়া হয়েছে, যেখানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ দেখা গিয়েছিল। পাশাপাশি, বস্তি এলাকাগুলোতেও এই সুবিধা দেওয়া হবে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মেরুল বাড্ডার সিরাজ মিয়া মেমোরিয়াল মডেল স্কুল প্রাঙ্গণে ‘রমজানে সুলভমূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রয় কার্যক্রম’ উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, বাজারে অযৌক্তিকভাবে যারা খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ায়, তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। এবারকার রমজান ভিন্ন মাত্রায় পালিত হবে, যেখানে সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। অন্তর্বর্তী সরকার হিসেবে তারা শুধু সংস্কারমূলক পদক্ষেপই নেবে না, বরং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ নেবে।
এই কার্যক্রমের আওতায় নির্ধারিত কিছু পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে—প্রতি কেজি ড্রেসড ব্রয়লার মাংস ২৫০ টাকা, পাস্তুরিত দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা, প্রতি ডজন ডিম ১১৪ টাকা এবং প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৫০ টাকায় বিক্রি হবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি), বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি), বাংলাদেশ ডেইরি অ্যান্ড ফ্যাটেনিং ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএফএ), মিল্কভিটাসহ অন্যান্য অংশীজন এবং প্রান্তিক খামারিরা সহযোগিতা করছে।
সুলভমূল্যে এই পণ্যগুলো যেসব স্থানে পাওয়া যাবে, তার মধ্যে রয়েছে সচিবালয়ের পাশে (আব্দুল গণি রোড), খামারবাড়ী (ফার্মগেট), মিরপুরের ষাটফুট রোড, আজিমপুর মাতৃসদন, পুরান ঢাকার নয়াবাজার, বনশ্রী, হাজারীবাগ, মতিঝিলের আরামবাগ, মোহাম্মদপুরের বাবর রোড, মিরপুরের কালশী, যাত্রাবাড়ী (মানিক নগর গলির মুখ), শাহাজাদপুর, কড়াইল বস্তি (বনানী), কামরাঙ্গীরচর, খিলগাঁও (রেলক্রসিং দক্ষিণে), নাখালপাড়া (লুকাস মোড়), সেগুনবাগিচা (কাঁচাবাজার), বসিলা (মোহাম্মদপুর), উত্তরা (হাউজ বিল্ডিং), রামপুরা (বাজার), মিরপুর ১০, কল্যাণপুর (ঝিলপাড়), তেজগাঁও, পুরান ঢাকার বঙ্গবাজার এবং কাকরাইল।
এই অনুষ্ঠানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) তোফাজ্জেল হোসেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, মিল্কভিটার চেয়ারম্যান কমান্ডার জাহিরুল আলিম, এলডিডিপির প্রকল্প পরিচালক জসিম উদ্দিন, বিডিএফএফএর সভাপতি মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, বিপিআইসিসির সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও ছাত্র প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।