গফরগাঁও (ময়মনসিংহ),
৬ জুন ২০২৫:”শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না” — এই চিরসত্য কথাটিকে হৃদয়ে ধারণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গফরগাঁও উপজেলা শাখা ঈদুল আজহার এই পবিত্র দিনে এক মানবিক ও দায়িত্বশীল উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগ স্মরণে শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো হয়েছে ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা ও দায়িত্ববোধ থেকে।
তেমনই একজন শহীদ ছিলেন মোঃ কবির — ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার দত্তের বাজার ইউনিয়নের ষোলপুনিয়া গ্রামের একজন সাধারণ, পরিশ্রমী মানুষ। পেশায় রাজমিস্ত্রি হলেও দেশের সংকটকালে তিনি ছিলেন একজন সাহসী আন্দোলনকারী। রাজনীতির মাঠে তিনি বিএনপি-সমর্থক হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় তাকে জীবন দিতে হয় সেই ভয়াল সময়ের রক্তাক্ত আন্দোলনে।
তার এই আত্মত্যাগ নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয় — এটি ছিল একটি দেশের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার প্রচেষ্টা। সেই শহীদের রক্তেই শুরু হয়েছিল স্বৈরাচার পতনের সুর এবং একটি নতুন আশার আলো।
আজ ঈদুল আজহার পবিত্র দিনে, যখন সারা দেশ আনন্দ ও ত্যাগের মহিমায় মুখর, তখন শহীদ মোঃ কবিরের পরিবারের মুখে একটুখানি হাসি ফোটাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গফরগাঁও উপজেলা শাখা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে এই শহীদ পরিবারকে নগদ ১০,০০০ টাকা ঈদ উপহার প্রদান করা হয়, যা শুধু একটি আর্থিক সহায়তাই নয়, বরং একটি বার্তা — শহীদদের পরিবার একা নয়, আমরা তাদের পাশে আছি।
উপহারটি শহীদ পরিবারের হাতে তুলে দেন গফরগাঁও জামায়াতের আমির মাওলানা ইসমাঈল হোসেন। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পাগলা থানা জামায়াতের আমির মাওলানা এমদাদুল হকসহ দত্তেরবাজার ইউনিয়ন জামায়াতের নেতৃবৃন্দ।
মাওলানা ইসমাঈল হোসেন এ সময় বলেন,
“যারা দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ন্যায়ের জন্য জীবন দিয়েছেন, তারা জাতির গর্ব। শহীদ মোঃ কবিরের মতো বীর সন্তানেরা আমাদের প্রেরণা। শহীদদের পরিবার আমাদের সম্মান, আমাদের দায়িত্ব। আমরা সবসময় তাদের পাশে আছি, এবং ইনশাআল্লাহ থাকবো।”
এমন সময়োপযোগী ও মানবিক কার্যক্রমের মাধ্যমে গফরগাঁও জামায়াতে ইসলামি শুধু একটি পরিবারকে সহায়তা করেনি, বরং একটি বার্তা দিয়েছে সমগ্র জাতিকে— “শহীদের ত্যাগকে ভুলে যাওয়া নয়, শ্রদ্ধাভরে বুকে ধারণ করাই আসল দায়িত্ব।”