আশরাফুল ইসলাম ঈশ্বরগঞ্জ(ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক রিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি নজরুল ইসলাম ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (গতকাল) রাত ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১১টার মধ্যে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম মো. খোকন মিয়া (৫০)। তিনি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের করমা গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় রিকশাচালক। তার বাবার নাম কছিম উদ্দিন।
ঘটনার পর স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ রাত ১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে খোকন মিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত খোকন মিয়ার বাবা কছিম উদ্দিন ও গিয়াস উদ্দিন দুই ভাই ছিলেন। গিয়াস উদ্দিনের মৃত্যুর পর তার ছেলেদের সঙ্গে কছিম উদ্দিনের জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই বিরোধের জেরে উভয় পক্ষের মধ্যে ইতিপূর্বেও কয়েক দফা মারামারি ও মামলা হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়।
শুক্রবার রাতে ওই পুরনো বিরোধকে কেন্দ্র করে গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ও মগটুলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি নজরুল ইসলাম, তার ভাই ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মিলে চাচাতো ভাই খোকন মিয়াকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। নিহতের দুই হাত ও দুই পা ভেঙে ফেলা হয়, মাথায়ও আঘাত ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খোকনের ছেলে বিল্লাল হোসেন বলেন, “জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে আমার বাবাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে নজরুল ও তার ভাইয়েরা। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।”
এ ঘটনায় জোসনা আক্তার ও সোহাগ নামে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, “এটি পূর্ব বিরোধজনিত হত্যাকাণ্ড। ঘটনার পর আহত অবস্থায় খোকন মিয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার হাত-পা ভাঙা ও মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।”
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফরহাদ আহমেদ বলেন, “ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। অভিযুক্ত নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা ছাত্রদলকে অবহিত করা হয়েছে। তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া চলছে।”