মোঃ সারোয়ার হোসেন (ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি)
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নাসিরনগরে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ! ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। (গতকাল ৮ই জুন দুপুর ১ থেকে রাত ২ টা পর্যন্ত) কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই নাসিরনগর উপজেলায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। এ বিষয়ে সাধারণ মানুষ জানান এটি কি কোনো আত্মা, যে মাঝেমধ্যে জ্বালানির লাইনে ভর করে লোডশেডিং নামক বিভীষিকা নেমে আনে। নাকি এটি কোনো অলৌকিক সত্তা, যার মর্জিতেই নির্ধারিত হয় দিনের কোন ৮ ঘণ্টা মানুষ ঘামবে মোমবাতির আলোয়।
বিদ্যুৎ অফিসে গেলেই দেখা যায়, সব কর্মকর্তা যেন একেকজন ৩৩ কেভি-মন্ত্রজাপকারী। মুখে সেই চিরচেনা সুর:
“৩৩ কেভির লাইনে প্রবলেম। গরুর গাড়ি লাইন ছিঁড়ে ফেলেছে।”
“ফিডারে সমস্যা, কিন্তু দোষটা সব ৩৩ কেভির।”
বছরের পর বছর ধরে এই ৩৩ কেভির ওপর নির্ভরশীল থেকে জনজীবন চলছে নরক যন্ত্রণায়।
৩৩ কেভির ‘সমাধান’ ঈশ্বরের হাতে নেই।
কেউ জানে না এর স্থায়ী সমাধান কবে হবে। জনপ্রতিনিধিরা বলেন, “বিষয়টি নজরে আছে।” বিদ্যুৎ অফিস বলে, “প্রকল্প চলতেছে।” আর সাধারণ মানুষ তারা তো চার্জার লাইট, আইসব্যাগ আর গালাগালির ভরসায় বেঁচে আছে।
নাসিরনগরের মানুষ এখন কৌতুক করে বলে, “আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ আসা মানে উৎসব, আর যাওয়া মানে—৩৩ কেভি এসেছে!” এমনও অনেকে বলেন, “এটা তো আর বিদ্যুৎ নয়, রাশিফল! কখন আসবে তা কোনো জ্যোতিষীরও ঠিক নেই!”
নাসিরনগরের মানুষ চায় টেকসই সমাধান, এবং স্রেফ সম্মান। তারা আর ৩৩ কেভির নামে ঢাক ঢোল বাজানো অজুহাত চায় না। তারা চায় নিয়মিত বিদ্যুৎ, যাতে সন্তানদের পড়ালেখা হয়, দোকান চলে, হাসপাতালের স্যালাইন বাঁচে।
৩৩ কেভির নামে যে অপমান ও উপেক্ষা চলছে, তা আর কতকাল চলবে?
আপনারা যদি এই ৩৩ কেভি-র মিথ ভাঙতে চান, তবে প্রশ্ন তুলুন, প্রতিবাদ করুন। কারণ ৩৩ কেভির চেয়ে বেশি ক্ষমতাবান আর কিছুই নয়—একটি সচেতন জনতার গর্জন।