1. lukmanmiah2619@gmail.com : news_shadhin :
  2. shadhinsurjodoy@gmail.com : স্বাধীন সূর্যোদয় : স্বাধীন সূর্যোদয়
  3. info@www.shadhinsurjodoy.com : স্বাধীন সূর্যোদয় :
রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ০১:২২ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি:
স্বাধীন সূর্যোদয় অনলাইন পত্রিকায় আপনাকে স্বাগতম। সারাদেশে জেলা ও  উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহী হলে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করুন। হোয়াটসঅ্যাপ: ০১৮৮৩-৩০৬০৪৮

বিগত ১৫ বছরের বাস, এখন অবৈধ? প্রশ্ন অসহায় গৃহহীনদের!

প্রতিবেদকের নাম :
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫

বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি


‘দেশ স্বাধীন হয়েছে, কিন্তু প্রান্তিক মানুষের ভাগ্যের স্বাধীনতা এখনো আসেনি’— এরই যেন বাস্তব এক প্রতিচ্ছবি বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার খেজুরবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩১টি ভূমিহীন পরিবারের।

২০২৩ সালের ২২ মার্চ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় বরিশালের বানারীপাড়াকে ‘ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত’ ঘোষণা করা হয়। সেই ঘোষণার এক বছরের মাথায় ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যার দিকে পূর্বের কোনো নোটিশ ছাড়াই খেজুরবাড়ি আবাসনে উচ্ছেদ অভিযানে নামে উপজেলা প্রশাসন। অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বাইজিদুর রহমান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানান, আবাসনের ওই ৩১টি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বৈধ দলিল ছাড়াই সরকারি ঘরগুলো দখল করে বসবাস করছে। তারা যে মালিকানা দাবি করে দলিল দেখাচ্ছে, তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। এর আগেও তাদের একাধিকবার ঘর ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা তা মানেনি। ফলে উপজেলা প্রশাসন বাধ্য হয়ে এসব ঘরে তালা লাগানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং তা বাস্তবায়ন করে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা বা লিখিত নোটিশ ছাড়াই খেজুরবাড়ি আবাসনের ৩১টি পরিবারকে হঠাৎ করে ঘর থেকে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেয় উপজেলা প্রশাসন। ঘরের ভেতরে রয়ে যায় পরিবারের সদস্যদের খাবার, কাপড়-চোপড়, এমনকি গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্রও। কোথাও একটু থাকার জায়গার ঠাঁই না পাওয়ায় বিগত ছয়টি মাস এসব পরিবার তালাবদ্ধ ঘরের সামনে পলি-খড় দিয়ে বেড়া দিয়ে অস্থায়ীভাবে বসবাস করছে। ঝড়, বৃষ্টি বা বন্যার মধ্যেও ছোট ছোট সন্তানদের নিয়ে এই দুঃসহ জীবনযাত্রা এখন তাদের নিত্যদিনের বাস্তবতা।

ভুক্তভোগীরা বলেন, “আমরা তো অশিক্ষিত মানুষ। যখন ঘরের জন্য আবেদন করেছিলাম, তখন আমাদের একটি সাদা কাগজে ‘স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতিপত্র’ দেয়া হয়েছিল, যেখানে তৎকালীন ইউএনও ও চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর ছিল। আমরা ভেবেছিলাম এটাই বুঝি আমাদের মালিকানা দলিল। এখন প্রশাসন বলছে এই কাগজ অগ্রহণযোগ্য।” তারপরেও ইউএনও জানিয়েছিলেন, যাদের দখলে বৈধ দলিল নেই, কিন্তু যাওয়ারও কোনো জায়গা নেই—তাদেরকে তদন্ত করে অতিদ্রুত পুনর্বাসনের আওতায় আনা হবে। আর যাদের অন্যত্র জমি বা ঘর আছে, তারা পুনর্বাসনের যোগ্য বিবেচিত হবেন না।” তবে ছয়টি মাস পেরিয়ে গেলেও সেই কথা আর বাস্তবে প্রতিফলিত হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজখবর নেয়া হয়নি বলেই অভিযোগ এ সমস্ত ভুক্তভোগীদের।

ভুক্তভোগীরা আরো জানান, ‘আমরা এখানে ১৫-১৭ বছর ধরে বাস করছি। তখন আমাদের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় খেজুরবাড়ি আশ্রয়ণে কিছু ঘর খালি থাকায়, তৎকালীন ইউএনও এবং ইউপি চেয়ারম্যান স্থানীয়ভাবে যাচাই-বাছাই করে আমাদের আবেদন নিয়ে সেসব ঘরে থাকতে দেন। তখন খালি ঘরের দাবিদারদের বারবার নোটিশ দিয়েও সাড়া না পাওয়ায় আমাদের ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। এসব ঘরের বৈদ্যুতিক সংযোগ, কর প্রদান ইত্যাদির কাগসমূহে আমাদের নামসহ এলাকার নাগরিক হিসেবে ভোটার আইডি পর্যন্ত করা হয়েছে। বহুবছর যাবৎ শিশুদের স্কুল-কলেজে পড়াশোনা চলছে এখানেই। এমন বাস্তবতার পরেও উপজেলা প্রশাসনের এ আচরণ সত্যিই ন্যাক্কারজনক।’

প্রায় দুই দশক ধরে বসবাসের পরেও আজ তাদের বসবাস অবৈধ বলে ঘোষণা করা হচ্ছে। মানবিক দিক বিবেচনা করে প্রশাসনের এই আচরণকে অমানবিক ও দায়িত্বহীন বলেই মনে করছেন ভদ্রমহল। যদিও পার্লামেন্টে ঘোষণা দেয়া হয়, ‘দেশে একজন মানুষও ভূমিহীন থাকবে না’। অথচ বানারীপাড়ার খেজুরবাড়িতেই সেই ঘোষণার বিপরীত চিত্র চোখে পড়ে। ৩১টি পরিবার এখনো মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে তালাবদ্ধ ঘরের সামনের খোলা আকাশের নিচে। অবিলম্বে তাদের পুনর্বাসন ও যথাযথ তদন্তপূর্বক স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

মোঃ মেহেদী হাসান
বানারীপাড়া প্রতিনিধি
তাং- ১৩.০৬.২৫ইং

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  

[bangla_date]

© ২০২৪-২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | স্বাধীন সূর্যোদয় | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট